চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ভর্তির সুযোগ পাওয়া নাটোর সদরের ছাতনী ভাটপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আনসার আলীর ছেলে রাকিব হোসেনের লেখাপড়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এতে করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে আর দুশ্চিন্তা রইল না রাকিবের। মেডিকেল কলেজে ভর্তি থেকে শুরু করে পাঁচ বছরের এমবিবিএস কোর্সের খরচ বহন করবে বসুন্ধরা গ্রুপ। এতে খুশি রাকিব ও রাকিবের পারিবার এবং নাটোর কলেজের শিক্ষক বৃন্দ।
কালের কণ্ঠ শুভ সংঘের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এরপরই চেয়ারম্যানের নির্দেশে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনকে জানান রাকিবকে সহযোগিতা করার কথা। এরপর সোমবার দুপুরে কালের কণ্ঠ শুভ সংঘের পক্ষ থেকে রাকিব ও তার পরিবার এবং নাটোর এনএস কলেজের অধ্যক্ষকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালের কণ্ঠের নাটোর প্রতিনিধি রেজাউল করিম রেজা। পরে শুভ সংঘের সমন্বয়ক জাকারিয়া জামান কথা বলেন রাকিব ও তার পরিবারের সাথে।
ছাতনী ভাটপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক আনসার আলী ও মাজেদা বেগম দম্পতির ছেলে রাকিব হোসেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আনছার আলীর মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে যাওয়ায় তিনি পরিশ্রমের আর কোনো কাজ করতে পারেন না। সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তায় এই শরীর নিয়েও সপ্তাহে বেশ কয়েক দিন দুইশত টাকা হাজিরায় ইটভাটায় বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার কাজ করেন। রাকিব মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ায় পুরো এলাকাবাসীই আশা করেছিল সে ভালো কিছু করবে। সবার আশা পূরণ করে এবার সে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় এলাকার মানুষ খুশি হলেও হতাশায় পড়েছিলেন রাকিবের বাবা আনসার আলী ও মা আজেদা বেগম। রাকিবের বড় ভাই অনার্স পাশ করলেও এখনো কোনো চাকরি পায়নি।
রাকিব জানায়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইন্তাজ আলী স্যারসহ বিভিন্ন শিক্ষকদের সহযোগিতায় সে এতদিন লেখাপড়া চালিয়ে আসছিল। কিন্তু অর্থের অভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি ও তার লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তার পরিবারের নেই। এখন কিভাবে এই ব্যয়ভার সংস্থান হবে তা ভেবেই কূল পাচ্ছিল না। এ অবস্থায় বসুন্ধারা গ্রুপের এই সহযোগিতা তাকে মানুষ হওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছে। রাকিব জানায় তার ইচ্ছা একজন ভাল চিকিৎসক হওয়ার। তিনি একজন চিকিৎসক হয়ে সবার সেবা করতে চান।
রাকিবের বাবা আনছার আলী এ সহযোগিতা করার কখা শুনে আনন্দে নির্বাক হয়ে যান। তিনি বলেন, আল্লাহ বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের ভাল করবেন নিশ্চয়ই। রাকিবের মা মাজেদা বেগম বলেন, আমার ছেলের যারা লেখাপাড়ার দায়িত্ব নিলেন তাদের উপকারে কথা কোনদিন ভুলবনা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি বসুন্ধরা গ্রুপ যেন আরো ভাল কাজ করতে পারে।
news24bd.tv/আলী