আধুনিকতার নামে বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি যেন হারিয়ে না যায় : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

অতি আধুনিকতার নামে বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি যেন হারিয়ে না যায়, সে বিষয়ে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সিনেমেকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১ এর সমাপনী ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।  

এ সময় মন্ত্রী বলেন, আমাদের বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি, জারি, সারি, ভাটিয়ালী, নাটক, চলচ্চিত্র, যাত্রা, পালা গান যেন টিকে থাকে। যাতে আমরা বলতে পারি আমরা বাঙালি। চলচ্চিত্রে আমাদের বাঙালিত্ব যেন টিকে থাকে। অতি আধুনিকতার নামে আমরা যেন অস্তিত্ব বিকিয়ে না দেই।

তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্র ক্ষণে বাংলাদেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম একটি ক্ষেত্র হচ্ছে সংস্কৃতি। আর সংস্কৃতির বড় অংশ জুড়ে রয়েছে চলচ্চিত্র। আকাশ সংস্কৃতির যুগে যখন সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে, সেটা টিকিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। সিনেমা হলের আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করছেন। তিনি চান আমাদের দেশের শিল্প-সংস্কৃতি টিকে থাকুক।

তিনি বলেন, জীবনঘনিষ্ঠ ঘটনাপ্রবাহকে আন্তরিকভাবে ফুটিয়ে তোলা অনবদ্য সৃষ্টি হচ্ছে চলচ্চিত্র। অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজকসহ কলাকুশলীরা হচ্ছেন সেই চলচ্চিত্রের আর্কিটেক্ট। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে যে চলচ্চিত্র নির্মিত হয় তা আমাদের জাতিকে পথ দেখায়। একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী অভিনয় দিয়ে মানুষের জীবনকে স্পর্শ করতে পারেন, যা সাধারণ মানুষ পারেন না। এ কারণে দেশ ও বিদেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সম্মানিত করার আয়োজন অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন,অনন্ত সময় ধরে টিকে থাকতে পারে এ জাতীয় জীবনঘনিষ্ঠ নাটক-সিনেমা নির্মাণ করতে হবে। বিদেশী অপসংস্কৃতির আগ্রাসনের মাঝেও এখনো আমাদের দেশে সুরুচির মানুষ আছে। সেই ভালো রুচির চলচ্চিত্র দেখতে চাই, যেখানে জীবনের বাস্তবতা প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করে অসাধারণ সৃষ্টি সামনে নিয়ে আসা যায়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ড. মনোরঞ্জন ঘোষালকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা তুলে দেন প্রধান অতিথি। পরে তিনি বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার প্রাপ্তদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন।  

চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ড. মনোরঞ্জন ঘোষালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ও উৎসবের চেয়ারম্যান সালমা ডলি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, উৎসবের কো-চেয়ারম্যান অপূর্ব রায়, উৎসব পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মেঘ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

উল্লেখ্য, সিনেমেকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ১২১টি দেশের ৬০০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ডকুমেন্টারি ১১টি বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।

news24bd.tv/আলী