জাতিসংঘের বিবৃতিতে দেশের মানুষের ইজ্জত মাটিতে মিশে গেছে: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় জাতিসংঘের মহাসচিব উদ্বিগ্ন হয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এটা বিরল ঘটনা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ইজ্জত মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।  

বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি স্বীকার করেছেন এর দায় তারা এড়াতে পারেন না। পারবেন না, পারবেন কোত্থেকে? কারণ আপনারা যে সরকার তৈরি করেছেন সেই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। গায়ের জোরে বন্দুক-পিস্তল দিয়ে, আগের রাতে ভোটডাকাতি করে বাংলাদেশের মানুষের নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: যারা সরকারের পদত্যাগ চায় তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন: তথ্যমন্ত্রী

মির্জা ফখরুল বলেন, তারা যে সংবিধান তৈরি করেছে সেখানে তিনটি অনুচ্ছেদ নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না। রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হবে। আজকে স্কুলের ছাত্রী-গৃহবধূ যারা সরকারের ব্যাপারে সামান্য অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ফেসবুকের মাধ্যমে, তাদের আপনারা ধরে নিয়ে কারাগারে দিচ্ছেন।

সিলেটের এমসি কলেজে ধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীর শ্লীলতাহানিসহ দেশব্যাপী নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদে এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। ধর্ষণবিরোধী এই অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে বিএনপি।

কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ কর্মসূচি জনগণের মধ্যে নতুন আশার আলো সঞ্চার করেছে। এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এ দেশের মানুষ কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। কখনো একনায়ক, স্বৈরাচার ও ফ্যাঁসিবাদকে মেনে নেয়নি।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণের ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা বলেন, মাসখানেক ধরে দুর্বৃত্তরা এ কাজ করেছে। পুলিশ কিছু করেনি। কারণ, সারা দেশে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ভোটচুরির সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করেছে। তাই মানুষ আওয়ামী লীগকে ভয় পায় না। ভয় পায় পুলিশকে।

দেশ এখন এক মহাসংকটে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সংকট দেশের মানুষের অস্তিত্বের সংকট। মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে দেওয়ার সংকট। আমরা দীর্ঘদিন সেই স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করেছিলাম। আজকে আবারও আমাদের সেই লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হব। পরাজিত হবে স্বৈরাচার।

অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, পদত্যাগ করুন, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় কোনো দিকে পালানোর পথ পাবেন না।

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।

কর্মসূচিতে দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়।

news24bd.tv নাজিম