সালিশে তিন বোনকে লালা খাওয়ালো মাতব্বররা!

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে খারাপ আচরণের অভিযোগে একই পরিবারের তিন বোনেকে প্রকাশ্যে থুথু খাওয়ানোর ঘটনায়  আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঘটনাটি ঘটেছিল গত (১৫ আগস্ট) শনিবার কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী ছাটকড়াই বাড়ি গ্রামে।

নির্যাতিত ওই পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিচারের নামে তিন বোনেকে প্রকাশ্যে জোড় করে থুথু খাওয়ানোর ঘটনা ঘটলে গ্রামের প্রভাবশালীদের ভয়ে লজ্জায় তারা বিষয়টি নিয়ে চুপ ছিলেন।

নির্যাতিত ওই পরিবারের অভিযোগ- গত (১৪ আগস্ট ) শুক্রবার সন্ধার দিকে পাড়ের চর গ্রামের দুটি ছেলে ছাটকড়াই বাড়ি গ্রামে, খালা বাড়ি বেড়াতে আসেন সেই সুবাধে ছেলে দুটি নির্যাতিত অসহায় ওই দিনমজুরের বাড়িতে আসেন। এ সময় কিছু ধান্দাবাজ লোক তাদের আটক করে এবং ছেলে দুটি অবৈধ কাজে ওই বাড়িতে এসেছে এই মর্মে ছেলে দুটির পরিবারের কাছে ১৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।  

পরে ভোর রাতে ছেলে দুটির অভিভাবাক টাকা নিয়ে আসলে নির্যাতিত ওই পরিবারকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি ১৩ হাজার টাকা – ইনতাজল, জহরুল, মনিরুজ্জামান, মিজানুর রহমান মেম্বার ভাগাভাগি করে নেন।

এখানেই শেষ নয়, পরের দিন ১৫ আগস্ট শনিবার সকাল ১০টায় জহরুল ইসলামের বাড়ির সামনে সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, আজাহার আলী, ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, মোকছেদ দেওয়ানীর নেতৃতে উক্ত সালিশে প্রকাশ্যে বিচারের নামে তিন বোনেকে জোর থুথু খেতে বাধ্য করা হয়।

ভূক্তভোগী ওই তিন বোনের ছোট বোন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন – আমার মাকে ও থুথু খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়, এবং আমি কোনো ভাবে থুথু খাচ্ছিলাম না তখন ইনতাজুলের ছেলে গোলজার আমার মাথা ঠেসে ধরে জোর করে থুথু খেতে বাধ্য করে। আমরা লজ্জায় ,অপমানে, মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। আমরা এই অপমানের বিচার চাই।

ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন যদিও আমি সালিশ বৈঠকে ছিলাম তথাপি থুথু খাওনোর ব্যাপারে বিরোধিতা করেছি, আমার কথা মাতব্বররা শোনেনি।  

রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)আবু মু. দিলওয়ার হাসান ইনাম জানান, এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডাইরি হয়েছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে ,আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)