দুই যুবলীগ নেতাকে আটকের খবরে মহাসড়ক অবরোধ

ঝালকাঠিতে যুবলীগের দু’গ্রুপের উত্তেজনায় জাকির ও মিলন নামে দুই যুবলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ। এতে উত্তেজিত হয়ে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কলেজ মোড় অবরোধ করে জাকির সমর্থকরা।  

এ সময় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ২ ঘণ্টা সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখে অবরোধকারীরা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.বশির গাজী, সদর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত হয়ে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে যুবলীগ নেতাদের মুক্ত করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।  

জানা গেছে, সরকারি কলেজ, ফায়ার সার্ভিস মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও ফেস্টুন ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক কাউন্সিলর রেজাউল করীম জাকির এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলনের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

একপর্যায়ে সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে সাগর নামে সৈয়দ মিলনের এক অনুসারীকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। মঙ্গলবার সকালের এ ঘটনার পর বেলা ১১টার দিকে জাকির বাসমালিক সমিতিতে গেলে সৈয়দ মিলন ও তার সমর্থকরা হামলা করার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় বাসমালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভৈরবপাশা ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে।  

ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক কথা বলা হয়। এ কারণে পুলিশ রেজাউল করীম জাকির ও সৈয়দ মিলনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এতে জাকির সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে বরিমাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কলেজ মোড়ে রাস্তায় ট্রাক ও গাড়ি দাড় করিয়ে অবরোধ করে। টায়ারে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে মিছিল করতে থাকে জাকির সমর্থকরা।  

অবরোধকারীদের আন্দোলনে ৮টি রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। অবরোধ স্থানের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মহাসড়কের দু’পাশে প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।  

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. বশির গাজী, ডিবি পুলিশ পরিদর্শক ইকবাল বাহার খানসহ ডিবি পুলিশের একটি দল, সদর থানা পুলিশের একটি দল এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তরুন কর্মকার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

পরে মীমাংসার আশ্বাসে যুবলীগ নেতা জাকির ও সৈয়দ মিলনকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। যুবলীগ নেতা জাকির কলেজ মোড় পৌঁছলে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয় তার অনুসারী ও সমর্থকরা।  

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলন’র সাথে কথা বলার জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।     সৈয়দ মিলন অনুসারী ঝালকাঠি সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু জানান, ''সাগর নামে এক কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মঙ্গলবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে গেলে সেখানে জাকির সমর্থকরা বেদম মারধর করে। তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে জাকির ভাইকে ফোনে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বাস মালিক সমিতিতে যেতে বলেন। আমরা সেখানে গেলে তিনি সমিতিতে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমাদের কথা শুনেননি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে দু’জনকেই থানায় নিয়ে যায়। পরে এমপি ও আমাদের অভিভাবক আমির হোসেন আমু’র মীমাংসার কথা বললে পুলিশ তাঁদের ছেড়ে দেয়। '' 

জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করীম জাকির বলেন, আমি বাস মালিক সমিতিতে গেলে আমাকে ঘেরাও করা হয়। সেখান থেকে আমাকে থানায় নেয়া হয়। আমি জনসাধারণের যে ভালোবাসা পেয়েছি তাতে তাঁদের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।  

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. বশির গাজী জানান, যুবলীগের দু’গ্রুপের উত্তেজনা বিরাজ করায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছিলো। আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।  

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)