প্রকৌশলীকে শাস্তির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) যে প্রকৌশলীর ভুল মূল্যায়নের কারণে একটি প্রকল্পে সরকারের বিপুল টাকা অপচয় হয়েছে সেই প্রকৌশলীকে ফের সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি প্রকল্পে দায়িত্ব দেওয়ার ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

ওই প্রকৌশলীর গাফিলতির কারণে স্থানীয় জনগণ ক্ষতির মুখে পড়েছে, সেই প্রকৌশলীকে তিরস্কার না করে কী কারণে পুরস্কৃত করা হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী ওই প্রকৌশলীকে প্রকল্পের দায়িত্ব না দিয়ে শাস্তির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি দেশে যেভাবে শাক-সবজি উৎপাদন এবং সবজি রপ্তানি যে হারে বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এখন থেকে দুটি কার্গো বিমান কেনার উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

পরিকল্পনা কমিশনের দেওয়া তথ্য মতে, একনেক সভায় ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ভোলার চরফ্যাশন পৌর শহর সংরক্ষণ শিরোনামের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হলে প্রকল্পের পিডি হিসেবে যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।  

একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভা সংরক্ষণের জন্য যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে, একই জায়গায় আগে আরেকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। ওই প্রকল্পে যিনি পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁর মারাত্মক গাফিলতি ছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওই কর্মকর্তা প্রকল্পের ভুল মূল্যায়ন করেছিলেন। ওই প্রকৌশলীর কারণে পুরো প্রকল্পটির টাকা পানিতে গেছে। এতে সরকারের অনেক টাকা অপচয় হয়েছে। যে প্রকৌশলীর কারণে সরকারের এত টাকা ক্ষতি হলো তাঁকেই আবার আরেকটি প্রকল্পে দায়িত্ব দেওয়া হলো। এটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ওই কর্মকর্তাকে কেন শাস্তি দেওয়া হয়নি, তা পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও পানিসম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের কাছে জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তখন দুজনই প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন, বৈঠক শেষ করেই ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

তখন আগে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সে প্রশ্নও করেন প্রধানমন্ত্রী। যে প্রকৌশলী ভুল করেছেন, অনিয়ম করেছেন, তাঁকে পুরস্কার হিসেবে আরেকটি প্রকল্পে পিডির দায়িত্ব দেওয়ায় অবাক হন তিনি। পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগের প্রকল্পটিতে ওই প্রকৌশলীর গাফিলতির বিষয়টি প্রমাণিত। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)