নির্বাচন মূলত গণতন্ত্রের চর্চা: ফরহাদ মজহার

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র বুঝি। কিন্তু নির্বাচনের সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন মূলত গণতন্ত্রের একটি চর্চা’।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের আলী আহাম্মদ চুনকানগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে পাঠ চিন্তা আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র আছে, এখন আমাদের গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে। এখন চর্চা করতে হলে আমাদের সরকার নির্বাচিত করতে হবে। সরকার নির্বাচন এটি আবার ভিন্ন প্রক্রিয়া’।

তিনি আরও বলেন, ‘সবাই মিলে আমরা বলার ইচ্ছাটা আমাদের মধ্যে আসে না। আমরা সবাই বিচ্ছিন্ন মানুষ। আমাদের চাহিদাও আলাদা আলাদা। চাহিদার যে জগতটা আছে, তাতে আমরা একে অপরের প্রতিযোগী। আমার চাহিদা চরিতার্থ করার জন্য সমাজ যেমনিভাবে আমার জন্য বাধা আবার একইভাবে উপায়ও বটে। সমাজের বাহিরে গিয়ে আমরা চাহিদা মেটাতে পারি না। আমরা চাহিদার বিষয়টা যদি বুঝতে না পারি তাহলে বুঝতে পারব না মানুষ কেনো শহীদ হয়। কারণ তার মধ্যে সব সময় পরমার্থিকতা বাস করে। আর এই পরমার্থিকতা চরিত্র সব সময় চিরসবুজ থাকে। আমরা মনে করি, শিল্প, সাহিত্য, দর্শন মানেই আপনি রবীন্দ্রনাথকে মানেন। রবীন্দ্রনাথও কিন্তু খারাপ না ঠিকই আছে। শিল্প-সাহিত্যে তারও অনেক অবদান আছে। কিন্তু শিল্প-সাহিত্য, দর্শন মানে আরও অনেক বড় কিছু’।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘এবারের গণ-অভ্যুত্থানের লড়াইটা আর ৭১-এর লড়াইটার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। এবার আমরা সুনির্দিষ্টভাবে ফ্যাসিবাদ, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এবার আমরা শুধু এক ব্যক্তির পদত্যাগ করিয়েই থেমে যাই না। এখন আমরা রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন চাচ্ছি। কিভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হয়, রূপান্তর করতে হয় তা আমাদের সমাজে পরিষ্কার না। গণ-অভ্যুত্থানে আমরা এখনো সফল হতে পারিনি। এই গণ-অভ্যুত্থানকে কিভাবে বিজয়ের পথে নেওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করার জন্যই আজকের এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। এত দিন আমরা গণ-অভ্যুত্থান দেখেছি। এখন আমাদের প্রতিবিপ্লব দেখতে হবে। বর্তমানে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। আমাদের ভুলগুলো শোধরাতে হবে’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না, এই সরকার কিভাবে নিজেদের বৈধ দাবি করবে। আমি যতটুকু বুঝতে পারছি, বিদ্যমান আইনের মধ্যে এই সরকারকে বৈধ বলার কোনো কারণ নাই। তারা জোর করে করবেন, যতটুকু ক্ষমতা তাদের হাতে আছে। কিন্তু এটা কখনো বৈধ হবে না’।

এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচিত্র নির্মাতা হাসান জাফর দিপু, সারোয়ার তুষার, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, ছাত্র ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা প্রমুখ।

news24bd.tv/JP