বেনজীরের ক্যাশিয়ার মিজানের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা ও রূপগঞ্জ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।

বুধবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. আশিকুর রহমান দেওয়ান এই আবেদন করেন। এ বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি হবে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভাটারা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ৩০ এপ্রিল মাহবুব রহমান মিধু বাদী হয়ে রংধনু গ্রুপের রফিকুল ইসলামসহ আটজনের নাম উল্লেখসহ খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন। মিজানুর এ মামলার ৪নং এজাহারনামীয় আসামি। এ মামলায় মঙ্গলবার রাজধানীর ভাটারা থানার যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টায় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধে আসামি রফিকুলের নির্দেশে মেসার্স ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড ও সিটি মাল্টি এগ্রিকালচারাল কোম্পানির সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ করেন।

সম্পত্তিতে থাকা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে ও কেটে চুরি করে নিয়ে যায়। এ সময় কোম্পানির সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা তিনজন নিরাপত্তাকর্মী বাধা দিলে আসামিরা এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে নীলা-ফুলা জখম করে। আসামি কাওসার আহমেদ অপু মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় আসামিরা হুমকি দিয়ে বলে- এই সম্পত্তির মালিক তারা।

যদি এই সম্পত্তি দখলে রাখতে চাস, তাহলে তোদের বসকে বলবি পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে। যদি চাঁদা না দেয় তাহলে ভবিষ্যতে আরও লোকজন নিয়ে এসে এই সম্পত্তি দখল করে নিব এবং যে বাধা দিবে তাকেই মেরে লাশ গুম করে ফেলব। আসামিরা কোম্পানির সম্পত্তিতে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে চুরি করে নিয়ে দুই লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।

পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, খুনসহ ২০টিরও বেশি মামলা রয়েছে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান মিজান রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

সম্প্রতি অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রংধনু গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে গ্রুপটির বিভিন্ন কর্মকর্তার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এর আগেও দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে রফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমানের ত্রাসের রাজত্ব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।

দুই ভাইয়ের নানা অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের কথা উঠে আসে প্রতিবেদনগুলোতে। সেখানে বলা হয়, রফিক ও মিজানের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাদের হামলায় অন্তত দুই শ পরিবার ঘরছাড়া। মিজান ও রফিক শুধু জমি নয়, মাদরাসা, ঈদগাহ আর কবরস্থানও তাদের দখলদারির হাত থেকে রেহাই পায়নি।

news24bd.tv/FA