সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড বাতিল, নতুন পর্ষদ গঠন

শরীয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে নতুন এক পরিচালক ও ৪ জন স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। ফলে আরো একটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারাল এস. আলম গ্রুপ।

শনিবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পরিচালক হিসেব নিয়োগ পেয়েছেন সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মেজর (অব:) ডাঃ মোঃ রেজাউল হক। এছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ৪ জন হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাকসুদা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্সের অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল ইসলাম, রূপালী ব্যাংক পিএলসির সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোরশেদ আলম খন্দকার এবং চার্টার্ড একাউন্টেন্ট মোঃ আনোয়ার হোসেন।

এর আগে গেল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের শিল্পগোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের পর্ষদ বাতিল করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের পর্ষদে চেয়ারম্যান ছিলেন সাইফুল ইসলাম মাসুদের ছেলে আহসানুল ইসলাম।

২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় এসআইবিএল দখলে নেয় এস আলম গ্রুপ। এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৬ ব্যাংকের ঋণ বিতরণে গত ১৯ আগস্ট বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এসব ব্যাংক কৃষি, চলতি মূলধন, সিএমএসএমই, প্রণোদনা প্যাকেজ এবং নিজ ব্যাংকে রক্ষিত এফডিআরের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা দিতে পারবে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ নগদ মার্জিন নিতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ বা সীমাতিরিক্ত বকেয়া স্থিতির নগদ আদায় ছাড়া বিদ্যমান বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়া যাবে না।

এস আল‌মের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফা ইসলামী ব‌্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এছাড়া বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকও নিয়ন্ত্রণ নেয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প‌রিদর্শন প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ৯ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। অথচ ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে ব্যাংকটি দেখিয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা।

একইসঙ্গে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটির পরিদর্শন টিম ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ পেয়েছে ৮ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকটি দেখিয়েছে মাত্র ৬৪ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৮ হাজার ৬৩ কোটি টাকা গোপন করেছে।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। সরকার পরিবর্তনের পর এস আলম ঘনিষ্ঠরা গা-ঢাকা দিয়েছেন।

news24bd.tv/DHL