কমলা হ্যারিসের নাটকীয় জীবন

আগামী বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনশনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়ন গ্রহণ নেবেন কমলা হ্যারিস।   মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতোমধ্যেই জানান আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। দলের অনেকেই চাননি তিনি নির্বাচন করেন, কারণ বাইডেনের বয়স হয়েছে। স্মৃতিশক্তি লোপ পাচ্ছে। গত ২১ জুলাই দুপুর ১টা ৪৬ মিনিটের দিকে  এক্সে দেওয়া এক টুইটে বাইডেন এ ঘোষণাটি দিয়েছিলেন। এরপরই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিস আলোচিত হতে থাকেন।  ভারতীয় সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য জিটিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন কমলা হ্যারিস সম্পর্কে আজ রোববার ( ১৮ আগস্ট) । তিনি জানিয়েছেন এক কালো মেয়ের সংগে সাদা ইহুদির প্রেমে ভেসে যাওয়ার গল্প। এক অভিবাসী তরুণীকে এক ডিভোর্সি পুরুষের সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসার কাহিনী। মনে রাখতে হবে, ক্যালিফোর্নিয়ার আইনজীবী কমলা হ্যারিসের সংগে যখন ডগলাস এমাহফ-এর পরিচয় হয়েছে, তখনও তিনি সিনেটর হননি। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছিন্ন আইনজীবী ডগলাস এমাহফ পেশার দিক থেকে দারুণ সফল। সেই সফল, উচ্চবিত্ত ইহুদি আইনজীবী প্রথম ডিনারে এসেই কমলা হ্যারিস-এর এমন প্রেমে পড়ে গেলেন যে, রাতে ফিরে মেইল করে জানিয়ে দিলেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলার জন্য তিনি কোন্ কোন্ সন্ধ্যা বরাদ্দ রেখেছেন, এবং আবার ডিনার ডেট-এর জন্য তিনি কতোটা উন্মুখ। সেই শুরু। তারপর থেকেই ইহুদি ডগলাস এমাহফ প্রতিটি মিনিটে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসের স্বপ্ন দেখার শরিক হয়ে থেকেছেন। সিনেটর হওয়ার সাফল্য, এরপর ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার ব্যর্থতা পর্যন্ত, জীবনের প্রতিটি চড়াই-উৎরাইতে। এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার। এখন হতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।  জিতলে প্রেসিডেন্ট হবেন।    এদিকে এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রথম বার্তাটি দেওয়ার ২৭ মিনিটের মাথায় কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন বাইডেন।   এক্সে দেওয়া পোস্টে বাইডেন বলেন, ‘২০২০ সালে দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পর আমার প্রথম সিদ্ধান্তটিই ছিল কমলা হ্যারিসকে আমার ভাইস প্রেসিডেন্ট করার। আর এটা ছিল আমার নেওয়া সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। চলতি বছর কমলাকে আমাদের দল থেকে মনোনীত (প্রেসিডেন্ট প্রার্থী) করার জন্য আজ আমি তাঁকে পূর্ণ সমর্থন ও স্বীকৃতি দিচ্ছি। ’ কমলা হ্যারিসের স্বামী ডগলাস এমহফ খবরটা একটু দেরি করেই জানতে পেরেছিলেন। বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেওয়ার খবরটি যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন এমহফ লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি সোল সাইকেল ক্লাসে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে তখন মোবাইল ফোন ছিল না। পরে মোবাইল হাতে নিয়ে এমহফ দেখেন, তাঁর অনেকগুলো মিসড কল জমা হয়ে আছে। এর মধ্যে তাঁর স্ত্রীর নম্বর থেকেও কয়েকটি ফোন এসেছে। কমলা হ্যারিসের খবরটি জানতে পারার পর এমহফ মজা করে বলেছিলেন, ‘আর কখনোই গাড়িতে ফোন ফেলে আসব না। ’ ‘যখন আমরা লড়াই করি, আমরা জিতি’ এই হচ্ছে কমলা হ্যারিসের স্লোগান।   এ স্লোগানের পেছনেও নাকি গল্প আছে। হ্যালো ম্যাগাজিন জানাচ্ছে কমলা ও এমহফ বিয়ের আগে প্রেমের শুরুতে নাকি প্রায়ই এই কথা বলতেন। তাদের বেশ প্রতিকূলতার ভেতরে জীবনে যেতে হয়েছে। এরিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়া কমলা হ্যারিসের স্বামী ডগলাস এমহফ স্ত্রীকে দায়িত্ব পালনে সাহায্য করতে চাকরি ছেড়েছেন। পেশায় আইনজীবী ডগলাস এমহফ 'ডিএলএ পাইপার' নামে একটি ল ফার্মে কাজ করতেন। সেখানে তিনি মূলত বিনোদন, খেলাধুলা ও গণমাধ্যম ক্ষেত্রের মামলাগুলো দেখতেন। ২০১৭ সালে ওই ল ফার্মে যোগ দেন এমহফ। এছাড়া ফার্মের অংশীদারদেরও একজন ছিলেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি  ৫ নভেম্বর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে হবে কমলার ভাগ্য নির্ধারণ।

news24bd.tv/ডিডি