হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ

বিগত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের মন্দির ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নারীদের হয়রানি করার মতো তথ্যও পাওয়া গেছে। এই সঙ্কটের দ্রুত সমাধান দাবি করেছেন বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংখ্যালঘুদের ওপর এসব নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক, বাংলাদেশ সনাতনী সচেতন ছাত্র সমাজ, সনাতনী শিক্ষার্থী ঐক্য এবং সুশীল সমাজের নাগরিকরা।

এই মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরবর্তী সময়ে মন্দির, প্রতিমা, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর লুটপাট অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়। দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়। রাতের আঁধারে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। বিগত দিনে হওয়া হিন্দু নির্যাতনের কোনও বিচার না হওয়ায় নির্দ্বিধায় এই নারকীয় কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম, প্রতিনিধি ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

এসময় চয়ন পাল নামের এক বিক্ষোভকারী একটি গণমাধ্যমকে জানান, ‘প্রত্যেকটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর যেভাবে অত্যাচার নিপীড়নসহ মন্দির ভাঙচুর করা হয়, এটার প্রতিবাদ জানানোর জন্যই আমরা আজকে এখানে সবাই একত্রিত হয়েছি। ’

সুজন দেবনাথ নামের আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এতে আমরা শঙ্কার মধ্যে আছি। আমরা আশা করবো দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান চাই। ’

প্রসেনজীৎ কুমার হালদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন চৈতি বসাক, মনীষ বাড়ৈ, সাজেন কৃষ্ণ বল, নোবেল সাহা, সোনামনি কর্মকার, পিযুষ দাস, অনুপম দাস, অঙ্কন কর্মকার, অনিক দাস প্রমুখ। এসময় বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক সংগঠনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে ২০ দফা অধিকার ও দাবি তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিকের আয়োজনে বিভিন্ন সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও মানববন্ধনে কয়েকশ’ সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ উপস্থিত ছিলেন। প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে তারা শাহবাগের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যান।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দেশব্যাপী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি লক্ষ্য করা হয়। বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট ও ডাকাতির মতো ঘটনায় ছাত্রজনতা এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ পুনরায় নিজ নিজ থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে।

news24bd.tv/SC