নেপালে আবারও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৫

নেপালে আবারও হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে পাইলটসহ চার আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। আরোহীরা চারজনই চীনা নাগরিক। এএফপি বুধবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এয়ার ডাইনেস্টি হেলিকপ্টারটি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে সায়াব্রুবেসির দিকে যাচ্ছিল। এই জায়গাটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। এটি বেশ কয়েকটি ট্র্যাকিং রুটের সূচনা পয়েন্ট বলে পরিচিত। ফলে ট্রাকিং-এ আসা পর্যটকদের বেশ চাহিদা এই জায়গাটির প্রতি।

নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, উড্ডয়নের তিন মিনিট পরেই হেলিকপ্টারটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে সেটি রাজধানীর উত্তরে নুওয়াকোট জেলায় বিধ্বস্ত হয়। উদ্ধারের জন্য দুর্ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক আরেকটি হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে।

বিমান চলাচলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নেপালের একটি দুঃখজনক ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে এবং হিমালয় প্রজাতন্ত্র কয়েক দশক ধরে মারাত্মক হালকা বিমান এবং হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার ঘটনা দেখেছে।

পুলিশের মুখপাত্র ড্যান বাহাদুর কারকি এএফপিকে জানান, পাইলটসহ আরোহী পাঁচজনের সবাই মারা গেছেন।

নুওয়াকোট জেলা আধিকারিক রাম কৃষ্ণ অধিকারী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘হেলিকপ্টারটি পাহাড়ের ঢালের একটি জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে আমরা এখনো এর কারণ বা কিভাবে এটি ঘটেছে, তা জানি না। ’

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা তাকে দুর্ঘটনা ও ঘটনাস্থলে আগুনের বিষয়ে জানানোর পর তিনি সেখানে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের পাঠান।

এএফপির তথ্য মতে, পাহাড়-পর্বতে বেষ্টিত নেপাল আকাশপথে চলাচলের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তার ওপর রয়েছে দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ, অপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার অভিযোগ। এসব কারণে দেশটিতে প্রায়ই প্রাণঘাতী প্লেন ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ঘটে।

এর আগে ২৪ জুলাই কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি প্লেন দুর্ঘটনায় ১৯ আরোহীর মধ্যে ১৮ জনই নিহত হয়। বেঁচে যান শুধু পাইলট। ওই ঘটনার দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও দুর্ঘটনার কবলে পড়ল দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।

২০২৩ সালে নেপালে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে একটি মেক্সিকান পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়। ২০১৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান দেশটির তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী রবীন্দ্র অধিকারী।

নেপালে সর্বশেষ প্লেন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। সে সময় ইয়েতি এয়ারলাইনসের একটি প্লেন বিধ্বস্ত হলে ৭২ আরোহী মারা যায়। এর আগে ১৯৯২ সালে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের একটি প্লেন দুর্ঘটনার কবলে পড়লে ১৬৭ জন নিহত হয়। এটিই নেপালে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্লেন দুর্ঘটনা। ওই বছরের শুরুতে একই বিমানবন্দরের কাছে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ১১৩ জন নিহত হয়।

news24bd.tv/JP