জান্নাতে শহীদেরা আল্লাহর কাছে যা চাইবেন

প্রাণীকুলের জন্য মৃত্যু স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। জীবন নিয়ে জন্মানো প্রত্যেক প্রানীকে মৃত্যু বরণ করতে হবে। কিছু মানুষ স্বাভাবিক নিয়মে মৃত্যু বরণ করেন। পরিবার, আত্মীয় পরিজন কিছুদিন শোক প্রকাশ করেন তারপর মৃত মানুষটাকে ভুলে যায়। আর কিছু মৃত্যু এমন যা, মানুষকে  অনুপ্রাণিত করে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মানুষকে। এমন মৃত্যু শহীদের মৃত্যু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

ধর্ম, রাষ্ট্র, সমাজ প্রতিটি জায়গায় শহীদের মর্যাদা অনেক। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—  আর আল্লাহর পথে যারা নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পার না। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৫৪)।   অর্থাৎ, প্রত্যেক মৃত ব্যক্তি কবরে বিশেষ ধরণের জীবন প্রাপ্ত হয় এবং সে জীবনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কবরের আজাব বা সওয়াব ভোগ করে থাকে। তবে সে জীবনের বাস্তবতা আমরা জানি না।   যেসব লোক আল্লাহর রাস্তায় ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিহত হন, তাদেরকে শহীদ বলা হয়। তাদের মৃত্যুকে অন্যান্যদের মৃত্যুর সমপর্যায়ভুক্ত মনে করতে নিষেধ করা হয়েছে।   হাদিসে আল্লাহর রাসূল বলেছেন, শহীদগণের রূহ সবুজ পাখীর মাঝে প্রতিস্থাপন করা হয়, ফলে তারা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা সেখানে ঘুরে বেড়াতে পারে। তারপর তারা আরশের নীচে অবস্থিত কিছু ঝাড়বাতির মধ্যে ঢুকে পড়ে। তখন তাদের রব তাদের প্রতি এক দৃষ্টি দিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি চাও? তারা বলে হে রব! আমরা কি চাইতে পারি? আমাদেরকে যা দিয়েছেন তা তো আপনি আপনার কোন সৃষ্টিকে দেননি। তারপরও তাদের রব আবার তাদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে একই প্রশ্ন করেন।  

যখন তারা বুঝল যে, তাদের কিছু চাইতেই হবে, তখন তারা বলে, আমরা চাই আপনি আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে ফেরত পাঠান, যাতে আমরা পুনরায় আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হতে পারি। শহীদগণের সওয়াবের আধিক্য দেখেই তারা এ কথা বলবে- তখন তাদের মহান রব তাদের বলবেন, আমি এটা পূর্বে নির্ধারিত করে নিয়েছি যে, এখান থেকে আর ফেরার কোন সুযোগ নেই। (মুসলিম, হাদিস : ১৮৮৭)।  

শহীদেরা তাদের শহীদি মৃত্যু নিয়ে গর্বিত হন, এবং পৃথিবীতে যারা থাকেন তাদের সুসংবাদ শুনিয়ে থাকেন। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে বলা হয়েছে— 

আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনোই মৃত মনে করো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে তারা জীবিকাপ্রাপ্ত।  

আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ হতে যা দান করেছেন তাতেই তারা পরিতুষ্ট; এবং তাদের ভাইয়েরা যারা এখনো তাদের সাথে সম্মিলিত হয়নি তাদের এই অবস্থার প্রতিও তারা সন্তুষ্ট হয় যে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। তারা আনন্দ প্রকাশ করে আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্য এবং এজন্য যে আল্লাহ মুমিনদের শ্রমফল নষ্ট করেন না। (সূরা আল ইমরান, আয়াত : ১৬৯-১৭১)।  

news24bd.tv/আইএইচ