খুন হওয়া পিবিআইয়ের পরিদর্শকের শরীরজুড়ে কোপ আর রডের আঘাত

কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেওয়ার পর হামলাকারীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন পিবিআইয়ের পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ ভুঁইয়া। তার পরিবার জানিয়েছে, মাসুদের শরীরজুড়ে ছিল অস্ত্রের কোপ আর রডের আঘাত।  

গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী এলাকার বাসা থেকে বের হওয়ার পর মাসুদ পারভেজের ওপর নির্মনভাবে হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখে। পরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তিনি মারা যান। মাসুদকে তার গ্রামের বাড়িতেই দাফন করা হয়েছে।  

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের কালান্দর গ্রামের আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া ও গুলজান বেগমের আট ছেলে-মেয়ের মধ্যে মাসুদ পারভেজ ষষ্ঠ। ১৯৯৬ সালে উপ-পরিদর্শক হিসেবে পুলিশে যোগদান করেন মাসুদ। পরে পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক হন।

কর্মক্ষেত্র নারায়ণগঞ্জ হলেও স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে ঢাকার রামপুরা বনশ্রী এলাকায় বসবাস করতেন মাসুদ পারভেজ। নিহতের আগের দিন মাসুদের কর্মক্ষেত্র নারায়ণগঞ্জের পিবিআই কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। সেদিন অবশ্য তিনি কার্যালয়ে ছিলেন না।

এদিকে, ছেলের এমন নির্মম মৃত্যুতে রীতিমতো বাকরুদ্ধ মা গুলজান বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলেকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।

মাসুদের ছোট ভাই সোহেল ভুঁইয়া জানান, তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের সব দায়-দায়িত্ব ভাইয়ের হাতে ছিল।

তিনি বলছিলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে কর্মরত থাকলেও অফিস করতেন ঢাকার বাসা থেকে গিয়ে। ঘটনার দিন বাসা থেকে চা খেতে সন্ধ্যার পর বের হন। পরে অপরিচিত নাম্বার থেকে বাসায় কল দিয়ে জানানো হয়, ভাইকে কুপিয়ে রাস্তার মধ্যে ফেলা রাখা হয়েছে। তাকে এমনভাবে আঘাত করা হয়েছে মানুষ মানুষকে এভাবে কখনও মারতে পারে না। আমি ভাই হত্যার সঠিক বিচার চাই। ’ 

কোটা আন্দোলনের মধ্যে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। মাসুদ পারভেজ ছাড়া বাকিরা হলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসআই (নিরস্ত্র) মো. মোক্তাদির এবং ডিএমপির প্রটেকশন বিভাগের নায়েক গিয়াস উদ্দিন। তাদের পরিবারকে আইজিপির ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়।

news24bd.tv/SHS