ঢাকায় সংঘর্ষে নিহত দুই যুবকের পরিচয় মিলল

ঢাকার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- নিউমার্কেট এলাকার হকার মো. শাহজাহান (২৫) এবং নীলফামারী সদর উপজেলার বাদশা আলীর ছেলে সবুজ আলী (২৫)।

আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে শাহজাহানের মরদেহ শনাক্ত করেন তাঁর মা আয়েশা বেগম ও মামা মোসলেম উদ্দিন।  

পরে প্রযুক্তির মাধ্যমে নিহত সবুজ আলীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব আলী।

আজ বেলা ২টা থেকে সায়েন্স ল্যাব এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতা–কর্মীরা ঢাকা কলেজের ফটকের সামনে আর আন্দোলনকারীরা সায়েন্স ল্যাব মোড়ের দিকে অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। রাত আটটা পর্যন্ত সেখানে সংঘর্ষ চলে। এর মধ্যে সন্ধ্যায় শাহজাহানকে আহত অবস্থায় সিটি কলেজের সামনের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পথচারীরা উদ্ধার করে তাঁকে পপুলার মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর ঢাকা মেডিকেলে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, একজন অ্যাম্বুলেন্সচালক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই যুবকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ছেলেটিকে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই অ্যাম্বুলেন্সচালক আলী মিয়া বলেন, সিটি কলেজসংলগ্ন পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফোন পেয়ে তিনি সেখানে যান। সেখানকার লোকজন ছেলেটিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। তিনি ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাস্টমার কেয়ারে দায়িত্বরত মো. হৃদয় বলেন, কয়েকজন ছেলে সন্ধ্যার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় শাহজাহানকে নিয়ে আসেন। তখন তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সায়েন্স ল্যাব এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় শাহজাহান ছাড়া আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে একদল লোক ওই যুবককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তার নাম সবুজ আলী, বাড়ি নীলফামারী জেলায়।  

ওই এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে এই দুজনের মৃত্যুসহ অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অবস্থান থেকে তাঁদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন।

news24bd.tv/তৌহিদ