পরকীয়ার জেরে গণপিটুনি, সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বহিষ্কার

পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে গণপিটুনির শিকার হওয়া সেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. সবুজ সরদারকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত সবুজ সরদার ফরিদপুরের সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল এ বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

এর আগে বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. বুলবুল হাসানকে (সবুজ সরদার) তার সাংগঠনিক পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। সেই সঙ্গে স্থায়ীভাবে তাকে বহিষ্কারের জন্য ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটির কাছে পাঠানো হলো।

 সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সবুজ দলীয় আদর্শের তোয়াক্কা না করে নানা অপকর্ম ও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তার এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে গত রোববার (৭ জুলাই) গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটির নজরে আসে। পরে ঘটনার সত্যতা যাচাই-বাছাই করতে জেলা কমিটির পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটি তদন্ত করে ঘটনা সত্যতা পাওয়ার পর জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সবুজকে তার দলীয় পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা যায়, সরকার দলীয় পদ ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে সবুজ সরদার। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তারপরেও উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামের ৪ সন্তানের জননী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া করেন তিনি। মাঝে মাঝেই ওই নারীর বাড়িতে এসে দেখা করতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে গত শনিবার (৬ জুলাই) সকালে ওই নারীর সঙ্গে ফের দেখা করতে গেলে গ্রামবাসী তাকে ধরে ফেলেন। পরে তাকে চেয়ারে বেঁধে গণপিটুনি দেন।

এ ঘটনার ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে এক যুবককে। তার হাত বাঁধা। একজন বয়স্ক ব্যক্তি তার শার্টের কলার ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ সময় সবুজকে উপস্থিত সবার কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে শোনা যায়।  

অপরদিকে ১ মিনিট ২ সেকেন্ডের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি মঞ্চে এক নারীর সঙ্গে নাচছেন সবুজ। এ সময় তার হাতে মদের বোতল ছিল। যা নাচের তালে তালে খেতে থাকেন তিনি।

বহিষ্কৃত উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. সবুজ সরদার বলেন, স্থানীয় বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার সঙ্গে এই আচরণ করা হয়েছে। ভিডিওগুলো সাজানো বলেও দাবি করেন তিনি।

news24bd.tv/কেআই