বিএনপির নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা, গুলিবিদ্ধ শিশু

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে ১০ বছরের শিশু মাহদিয়া। বুকের উপর রাখা বাম হাত। সেই হাত জুড়ে ব্যান্ডেজ করা। কোমল গালে রক্তের ছোপ। স্বজনহীন শিশুটিকে সেবা করছে হাসপাতালের সেবিকা।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, শিশু মাহদিয়ার অস্ত্রোপাচার করে বাম হাত থেকে তিনটি গুলি বের করা হয়েছে। রক্তের শিরার কাছে রয়েছে গুলির আরও একটি অংশ। গাল ঘেষে গেছে আরও একটি গুলি। এখন আশঙ্কামুক্ত হলেও অল্পের জন্য শিশুটি বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে।

শনিবার দুপুরে জেলার শিবপুরে বিএনপি প্রার্থী মঞ্জুর এলাহীর প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্প দুবৃর্ত্তের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে শিশু মাহদিয়া। সে নির্বাচনী ক্যাম্পের উপর অবস্থিত শিবপুর দারুল উলুম ইসলামিয়া মহিলা মাদ্রসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। মাহদিয়া শিবপুরের মৃত জালাল মিয়ার মেয়ে। শিশু মাহদিয়াকে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাঁর হাতে অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১০ জন।

হাসপাতালের বেডে শুয়ে মাহদিয়া জানায়, গন্ডগোলের শব্দ শুনে আমি বারান্দায় কাপড় সরিয়ে বাইরের ঘটনা দেখছিলাম। ওই সময় কিছু একটা এসে আমার হাতে লাগে। আমি সরে গিয়ে দেখি রক্ত ঝড়ছে। পরে আর আমার কিছু মনে নেই।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মোশারফ হোসেন বলেন, মাদ্রাসার নিচে নির্বাচনী কার্যালয়টি নতুন করা হয়েছে। আমরা রাজনীতি করি না। তারপরও রাজনীতির বিবেদের গুলিতে মাদ্রাসার এক এতিম ছাত্রীকে রক্তাক্ত হতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। এই অবস্থায় পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

এদিকে ঘটনার পর জেলা হাসপাতালে আহত শিশু মাহদিয়াকে দেখতে যান বিএনপির প্রার্থী মঞ্জুর এলাহীর ছোট ভাই নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি শিশু মাহদিয়ার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। তাঁর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনসহ আহত মাদ্রাসা ছাত্রী এতিম মাহদিয়ার শিক্ষাসহ সারাজীবনের সকল খরচ বহন করবে বলে জানান।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/সুমন/তৌহিদ)