পরকালে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার ভয়াবহ শাস্তি

আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা সব মুসলিমের কর্তব্য। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে একাধিকবার এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো, তাঁর সঙ্গে অংশীদার কোরো না, মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো, নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন, নিকটাত্মীয়-প্রতিবেশী, অনাত্মীয়-প্রতিবেশী, পাশের সঙ্গী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে (ভালো আচরণ কোরো)। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদের, যারা দাম্ভিক, অহংকারী। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩৬)

সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি পার্থিব জীবনে খুবই দ্রুত হয়। আবু বকরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (ন্যায়পরায়ণ শাসকের বিরুদ্ধে) বিদ্রোহ ও রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা এত ভয়াবহ পাপ যে আল্লাহ এর শাস্তি দুনিয়ায় দ্রুত দেন এবং আখিরাতের জন্য বহাল রাখেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০২)

এমনকি আত্মীয়দের কেউ সম্পর্ক ছিন্ন করলে আগ বাড়িয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার নির্দেশ রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক শব্দটি অসীম দয়ালু শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়েছে।

আল্লাহ বলেন, ‘যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে আমি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখব। আর যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমি তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করব। ’ (বুখারি: ৫৯৮৮) অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি আমার কিছু আত্মীয়ের সঙ্গে আত্মীয়তা বজায় রাখি, কিন্তু তারা তা ছিন্ন করে। আমি তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করি, কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে।

তারা কষ্ট দিলে আমি সহ্য করি। তারা আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। ’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘বিষয়টি এমনই হলে যেমন তুমি বলছ তাহলে তুমি তাদের মুখে গরম ছাই নিক্ষেপ করছ অর্থাৎ এ কাজে তারা গুনাহগার হবে। আর যতক্ষণ তুমি এমন অনড় থাকবে ততক্ষণ তোমার সঙ্গে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্যকারী থাকবে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৫৮)

মহান আল্লাহ সবাইকে আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার তাওফিক দিন।