রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

আজ পহেলা বৈশাখ। রাজধানীসহ সারাদেশে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। তীব্র গরমে সবচেয়ে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। রোদের তীব্রতা এতটাই বেশি যে বাইরে কাজে বের হয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। একটু স্বস্তি পেতে অনেকে আশ্রয় নিচ্ছেন পার্কে কিংবা রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায়।

চৈত্র বিদায়ে দরজায় হাজির পহেলা বৈশাখ। চৈতালি হাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তীব্র তাপদাহ। এক সপ্তাহ ধরে পুড়ছে নগর জীবন। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। দিনে তীব্র গরমের পর রাতেও নেই স্বস্তি। রাতেও প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এর মধ্যে কোনো ভালো খবর দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস।

সহসাই তীব্র এ তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তির কোনো সুখবর নেই। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে দেয়া সবশেষ তথ্যে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৈশাখের প্রথম সপ্তাহজুড়ে গরমের এ দাপট থাকবে। আগের দিনের চেয়ে এদিন বেশি গরম অনুভূত হবে। এরপর মেঘের দেখা মিলতে পারে।  

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এছাড়া আগের দিন রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, বাগেরহাট, মানিকগঞ্জ ও ফরিদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের ৮ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ ও বাকি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া মোংলায় ৪০৮, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪০.৫, যশোরে ৪০.৪, ফরিদপুরে ৪০.৩, কুমারখালীতে ৪০.০, খুলনায় ৩৯.৮, সাতক্ষীরায় ৩৯.৭, ঢাকায় ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ ছাড়া পরবর্তী তিন দিনে আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, কোনো এলাকায় তাপমাত্রা যখন ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাকে বলে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে সেটি মৃদু তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসই হলো তীব্র তাপপ্রবাহ।

news24bd.tv/কেআই